সবার সুখে হাসেন তিনি কাঁদেন সবার দুখে । নিজের খাবার বিলিয়ে দেন অনাহারির মুখে। তিনি হৃদয়ের সমস্ত সুরভী দিয়ে বিশ্বাস করেন- বলো কী তোমার ক্ষতি, জীবনের অথৈ নদী, পার হয় তোমাকে ধরে দূর্বল মানুষ যদি । তিনি প্রিয়া ইসলাম ফাতিহা ।
বিশ্বমানবতার শ্রেষ্ঠ পথিকৃৎ মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়াসাল্লাম বলেছেন-যার প্রতিবেশী ক্ষুধার্ত অবস্থায় রাত্রিযাপন করে সে আমার মুমিন নয় ।
সত্য ধর্ম ইসলামের বিশ্বমানবিক চৈতন্য, গণতন্ত্র ও সমাজতন্ত্রের সমন্বিত পজেটিভ শিষ্টাচার, মানবকল্যাণ ও সমাজকল্যাণের উদারনৈতিক মানসিকতার এক উজ্জ্বল নক্ষত্র- সমকালীন পৃথিবীর অনবদ্য এক জীবনসঙগ্রামী নারী তথা প্রকৃত মানুষের সঙশপ্তক ” প্রিয়া ইসলাম ফাতিহা “। কারো কাছে তিনি কলকাতার দ্বিতীয় মাদার তেরেসা, কারো কাছে তিনি সাক্ষাৎ দেবী, কারো কাছে তিনি ফেরেশতা। তিনি কলকাতায় জন্মগ্রহণকারী বিশিষ্ট আন্তর্জাতিক ব্যবসায়ী সমাজসেবী- প্রিয়া ইসলাম ফাতিহা। প্রিয়া ঘোষাল থেকে প্রিয়া ইসলাম ফাতিহা। ভালো কাজ করতে করতে তিনি জয় করে চলেছেন সার্বজনীন মানবিক হৃদয় ।
শৈশবে প্রিয়ার বাবা ‘লিউকিমিয়া’ ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। বাবাকে চিকিৎসা করানোর মতো অর্থ বা সামর্থ্য তাদের ছিলোনা। বাবাই ছিলো তাদের সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। বাবার মৃত্যুর পর তাদের নুন আনতে পান্তা ফুরাতো। যদিও নানা বাড়ির দিক থেকে বেশ ধনাঢ্য ছিলো; কিন্তু আত্মসম্মানের ভয়ে তাঁর মা নানার বাড়ির কোনো সাহায্য নেননি। একটি সেলাই মেশিন দিয়ে তার মা জীবিকার তাগিদ মেটাতেন। কিন্তু এক বেলা খেলে অন্য বেলে খেতে পারতেন না। পরিবারের তিন সদস্য নিয়ে তাদের সংসার- মা ছোট ভাই এবং তিনি। সংসারের দুরাবস্থা দেখে পাঁচ বছর বয়সে তিনি একটি ছোটখাটো রেস্তরাঁয় প্লেট পরিষ্কারের কাজ শুরু করেন, দিনপ্রতি পনেরো টাকা বেতনে। পাশাপাশি পড়াশোনাও চালিয়ে যান প্রিয়া ঘোষাল ওরফে প্রিয়া ইসলাম ফাতিহা। এভাবেই কাটতে লাগলো দিনের পর দিন।
মাধ্যমিক পার করে বাড়ি বাড়ি গিয়ে-গিয়ে টিউশনি শুরু করেন ; সাথে একটি এনজিওতে জব। একদিন কোনো এক ছাত্রের বাড়ি পড়াতে গিয়ে এক শাড়ির কারখানার সন্ধান পান। কর্তার কাছ থেকে শাড়ি পাইকারি দরে কিনে কালিঘাটসহ বিভিন্ন কাপড়ের দোকানে ৩০ টাকা লাভে শাড়ি সরবরাহ করতে শুরু করেন। প্রথম দিন ১০০ পিছ শাড়ি ৩০ টাকা লাভে সেল করে ৩ হাজার টাকা উপার্জন করেন। সেই থেকেই শুরু হয় ব্যবসা জীবনের পথ চলা। এদিকে কলকাতা ইউনিভার্সিটি থেকে ব্যবসার উপর তিনি ডিবিএ- ডক্টরেট করেন।
সময়ের সাথে সাথে সাফল্যের সিঁড়ি বেয়ে আজ কলকাতার দশজন টপ রেঙকিঙ ব্যবসায়ীর মধ্যে তিনি তৃতীয়। দেশে বিদেশে বহুদূর বিস্তৃত হয়েছে প্রিয়া ইসলাম ফাতিহার বহুমাত্রিক ব্যবসা বাণিজ্য। তিনি ‘ফোমাল গ্রুপ অফ ইন্ডিয়া লিমিটেড’ কোম্পানীর প্রতিষ্ঠাতা। তাঁর ছোট ভাই অস্ট্রেলিয়ার সিডনি ইউনিভার্সিটির হিস্ট্রি লেকচারার।
তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ এতো যে, প্রতি বছর ১৮০ কোটি রুপি সরকারি ট্যাক্স দিতে হয়। বলা হয় তিনি যে মাটিতে পা রাখেন সেই মাটিতে সোনা ফলা শুরু করে দেয় ।
প্রতি বছর ৭ শত থেকে ১ হাজার কোটি ইন্ডিয়ান রুপি উপার্জন করেন তিনি। মোটকথা হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক তিনি। সাধারণ মানুষ রাজনৈতিক নেতাদের ‘মহাশয় মহাশয়’ করে আর রাজনৈতিক নেতারা তাঁকে ‘মহাশয় মহাশয়’ করে।
তিনি দলীয় ও বিরোধীদলীয় সবার অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী কন্ঠস্বর । তাঁর কণ্ঠ জাগ্রত আপামর মানুষের কল্যাণে। দেশ থেকে বিদেশি মিনিস্ট্রি- সর্বত্র প্রভাব বলয় বিশ্বমানবী প্রিয়া ইসলাম ফাতিহার। এখন প্রশ্ন হতে পারে এতো পাওয়ার এবং অর্থ দিয়ে তিনি কি করেন?
তিনি পাঁচটি আশ্রম পরিচালনা করেন। তিনটি বৃদ্ধা আশ্রম দুটি শিশু আশ্রম। বিভিন্ন জায়গায় তাঁর দশটি স্কুল আছে। যেখানে সুবিধা বঞ্চিত শিক্ষার্থীরা বিনা মূল্যে পড়াশোনা করে। শিলিগুড়িতে তাঁর বাবার নামে একটি হাসপাতাল আছে, যেখানে বিনা মূল্যে গরীব দুঃখী দুস্হ মানুষের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়। মসজিদ থেকে মন্দির সব উন্নয়ন মূলক কাজে তিনি সবার আগে সবসময়। এইবছর আম্ফানে ক্ষতিগ্রস্থ রাজ্যের মন্ত্রণালয়ে ১০০ কোটি অর্থ অনুদান প্রদান করে আরেকটি মানবতাবাদী নজির স্থাপন করেছেন একালের মাদার তেরেসা প্রিয়া ইসলাম ফাতিহা। শত শত দরিদ্র অসহায় অনন্যোপায় মানুষের মাথার ছাদ তিনি। হাজারো তরুণ তরুণীর কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে দিয়ে প্রিয়া জয় করেছেন অযুতনিযুত তারুণ্যের অন্তর। বিভিন্ন গনমাধ্যাম চাইলেও তিনি গনমাধ্যমে আসতে চাননা। নিজের মতো করে অসহায় মানুষদের মাঝে মানবতার হাত বাড়িয়ে দেন। তিনি ফলো করেন মহানবীর সেই শিক্ষা- এমন করে দান করো, তোমার ডান হাত দিয়ে দান করলে তোমার বাম হাতটি যেন টের না পায় ।
মাটির মানুষ ধন্য হলে ইতিহাস নিজ যত্নে লিখে তাঁর নাম । উজ্জ্বল অক্ষরে। স্পষ্ট পৃষ্ঠায়। সমকালীন পৃথিবীর মাদার তেরেসা প্রিয়া ইসলাম ফাতিহা আপনাকে পৃথিবীর মানবিক ইতিহাস কলিজায় ধারণ করবে আসমূদ্রহিমাচল।
মানবতার জয় হোক। আপনার নাম এই বোলে খ্যাত হোক, আপনি আমাদের লোক।
Leave a Reply