“আলোকবর্তিকা”
মোহাম্মদ আলী আসসাকী
জাহেলিয়াতের যুগে তমসাচ্ছন্ন অন্ধকারে,
পৃথিবী যখন অমানবিকতার করাল গ্রাসে,
মানুষ যখন বুভুক্ষিত হায়েনা জানোয়ারের বেশে,
অনাচার ব্যভিচার ধর্ষণ যে সময় নিত্যকার,
হানাহানি মারামারি খুনখারাবি অত্যাচার,
রক্ত নিয়ে যখন চলতো নিত্যকারের হোলিখেলা,
বিমাতা যখন হতো পুত্রের যৌনসঙ্গী এক বিছানায় কাটাতো রাত,
কন্যা সন্তান যখন হতো জীবন্ত প্রোথিত মাতায় ফেলতো চোখের জল,
নারী ছিলো যখন বাজারের পণ্য অসম্মানের বাতিঘর,
পরাধীনতার শেকলে বন্দী যখন নারীত্বের স্বাধীনতা,
মনোরঞ্জনের জন্য যখন ব্যবহার হতো জায়া জননী ভগ্নি কন্যা,
মদ জুয়া ধর্ষণ যখন ছিল সমাজের খ্যাতিমানের প্রতিক,
লুণ্ঠিত হতো যখন মানুষের স্ত্রী কন্যার সম্ভ্রম,
মূর্তির সামনে দেয়া হতো যখন সন্তানকে বলিদান
আল্লাহকে ভুলে যখন পাথরে গড়া দেবতার চলতো উপসনা
সত্য যখন মিথ্যার কাছে যুদ্ধে পরাজিত,
অন্যায় যখন ন্যায়ের বুকে খঞ্জর চালিয়ে করেছে রক্তাক্ত,
দুর্বল যখন সবলের অত্যাচারে ফেলেছে চোখের পানি,
ধর্ষক ও জালিম যখন সমাজের আদর্শ পুরুষ,
মানবতা যখন ভূলুণ্ঠিত আকাশে বাতাসে যখন মজলুমের আর্তনাদ।
সেই আঁধার তিমিরে হাতে নিয়ে আলোর মশাল,
এলেন ধরায় মুক্তি ত্রাতা মানবতার মহান নায়ক,
বিশ্ব মানবতার শান্তি ও মুক্তির মহান দূত,
মিথ্যা অন্যায়ের বিরুদ্ধে আপোষহীন বীর সেনা,
সত্য ও ন্যায়ের এক মূর্ত প্রতিক,
আদব ও আখলাকে পৃথিবীর সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানব,
হেদায়েতের পথপ্রদর্শনকারী এক আলোকবর্তিকা,
সত্যবাদী মানুষের অলঙ্ঘনীয় আদর্শ মহান পুরুষ,
সৃষ্ট ও সৃষ্টি জগতের মুক্তি ও কল্যাণকামী,
করুনাময়ী দয়ার সাগর বিশ্ব জাহানের প্রতি প্রভুর অনুগ্রহ,
ঐশ্বরিক বাণী আল কোরআনের মহান আধার,
শান্তির ধর্ম ইসলামের মহান প্রবর্তক,
সকল নবী রাসুলের অধিনায়ক,
সকল পয়গম্বরের শ্রেষ্ঠ রাসুল,
বিশ্ব প্রতিপালক আল্লাহ পাকের প্রিয় হাবিব,
বিচার দিবসে সকল মানবের শাফায়াতকারী,
পিপাসিত মানুষের পিপাসা নিবারণে কাউছারের মালিক,
হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা (সাঃ) আবির্ভূত হন।
আলোর মশাল জেলে দূরীভূত করেন জাহেলিয়াতের কালো,
ইসলামের ছায়াতলে এসে বিশ্বমানব পায় শান্তির ছায়া,
হানাহানি ছেড়ে মানুষ মানুষকে জায়গা দেয় হৃদয়ের গহীনে,
ঘোষিত হয় সকল মানুষ একই প্রভুর সৃষ্টি,
মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের স্বর্গ ঘোষণায় মেলে নারীর শ্রেষ্ঠত্ব,
দেনমোহর প্রথায় প্রতিষ্ঠা পায় নারীর স্বাধীনতা
মৃতের সম্পদে নারীদের প্রাপ্যতা নির্ধারণে মেলে নারী অধিকার,
মদ জুয়া ধর্ষণকে করেন হারাম ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ,
ব্যভিচারের মূল উৎপাটন করতে ঘোষণা করেন রজম,
বিচার বহির্ভূত হত্যা ঠেকাতে হত্যার বদলে হত্যা,
মজলুম অন্য ধর্মের হলেও জালিমকে শাস্তি প্রদান,
দূর্বলের পক্ষে স্বয়ং নিয়ে অবস্থান,
আলোকিত করেছেন মানব ও মানবতা।
Leave a Reply