বৈশাখ কি দেবো তোমায়
বৈশাখ তুমি তো আসবে জানি
কি দেব বসে আমি এই চিলেকাটার এক কোনায়
ধুলামাখা তম্বুরার জলাংগ তারে
খঞ্জিত আঙুল রেখে কি পাঁচালী শোনাব তোমায়।
হাড়গিলে পাখীটি ত্যক্তভুষণে আমলকীর ডালে
রৌদ্র দুপুরে পেচক রবে অবোধ্য এক সুর সাধে
পোয়াতি গাভীটির ড্যাব ড্যাবা চোখে চোখ রেখে
ভাবি কি আছে আমার এই বিভক্ত গোয়াল ঘরে।
কি দেবো তোমার অঞ্জলী ভরে বিনীত আদরে ?
চৈত্র সংক্রান্তির রাতে কৃষ্ণ পুকুরের পাড়ে বসে
কচুরী পানার গায়ে চাঁদের আলো দেখে ভাবি
যা ছিল হৃদয়ের দাওয়া ঘরে হারিয়েছি সব
গত বসন্তে মঞ্জুরিত মাধবীর বক্রিত শাখায়।
সারাটি শারদ কেটেছে শুভ্র মেঘের পিছে
বেদেদের সাথে ঘুরে – বাউলিয়া সুরে সুরে
বনশ্রী গাঁয়ের ধারে তমশ্রী নদীর পাড়ে পাড়ে
বিস্তীর্ণ খরা মাঠে বুনিনি কোন শস্যের দানা।
হেমন্তে এবার উঠেনি কোন সোনালী ফসল
শীত সকালের উঠানে ছিল না কোন
ছড়ানো ধানের কনা – এ নবান্নে তাই
শূণ্য আমার শস্যের খানদানি গুদাম খানা।
ভাঙা সাঁকোর উপর বসে শঙ্খ খালের ঘোলাটে জলে
লজ্জিত চাঁদের বিবস্ত্র আলো দেখে ভাবি কাল ভোরে
কি ভুষণে সাজিব আমি কোন সুরে বাঁধিব বৈশাখী গান
রঘু দর্জির দোকানে আছে বাকিতে কেনা হরিৎ বস্ত্রখানি।
বৈশাখ তুমি এসো তবু ধীর পায়ে লঘু স্বরে
আমি বিহীন নগরীর উজ্জ্বলিত উপকন্ঠে
আমি রব পড়ে একা এই চিলে কোটায়
তম্বুরার জলাংগ তারে খঞ্জিত অঙুলী রেখে।
Leave a Reply