মাসুদ রানা বাচ্চু সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
প্রশাসনের নাকের ডোগায় যমুনা নদীর চৌহালী উপজেলায় ৭টি পয়েন্টে রাতভর অবৈধভাবে বালু উত্তোলন চলছে। বালু উত্তোলনের ফলে চৌহালী উপজেলার সদর ইউনিয়ন নামে খ্যাত খাসকাউলিয়া, খাসপুকুরিয়া ও বাঘুটিয়া ইউনিয়ন হুমকির মুখে। চৌহালী উপজেলা ৭টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। ইউনিয়নে সদিয়াচাদপুর, স্থল, ঘোরজান এনায়েতপুরের পুর্বে যমুনা নদীতে অবস্থিত। টাঙ্গাইজেলার পশ্চিম সীমানা চৌহালীর সদর ইউনিয়ন নামে খ্যাত খাসকাউলিয়া, খাসপুকুরিয়া ও বাঘুটিয়া ইউনিয়ন ও শাহজাদপুর উপজেলার পূর্ব সীমানা উমরপুর ইউনিয়ন অবস্থিত। খাসকাউলিয়া ইউনিয়নে চৌহালী উপজেলার প্রশাসনিক কার্যক্রম চলে থাকে। খাসকাউলিয়া, খাসপুকুরিয়া ও বাঘুটিয়া, সদিয়া চাঁদপুর ইউনিয়নের পশ্চিমে যমুনা নদী থেকে ৭টি পয়েন্টে রাত্রী ৮ থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। বালু উত্তোলনের ফলে ৪ টি ইউনিয়ন ভাঙ্গনের কবলে পরবে। ইতিমধ্যে ইউনিয়নের কিছু কিছু জায়গায় ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। বালু উত্তোলন বন্ধ না হলে বর্ষা মৌসুমে দেখা দিতে পারে তীব্র ভাঙ্গন। তীব্র ভাঙ্গনরোধে জিও ব্যাগ ফেলানোও হচ্ছে। জিও ব্যাগ ফেলানো দেখে সাধারন মানুষের মধ্য হাসাহাসি হচ্ছে। কেননা অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ করা বাদে লুটপাট করা উদ্দেশ্যে কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ এনে জিও ব্যাগ ফেলানোর কাজ করছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার খাসকাউলিয়া ইউনিয়নের চৌহালী বেড়িবাঁধ, জ্যোতপাড়া, খাসকাউলিয়া শিকদারপাড়া, খাসপুকুরিয়া ইউনিয়নের কাঁঠালিয়া ও বাঘুটিয়া ইউনিয়নের বিরিদাশুরিয়া, সদিয়া চাঁদপুরের মেহেরনগর ও এনায়েতপুর মেডিকেল কলেজের পিছনসহ মোট৭টি পয়েন্টে চলছে লোড আনলোড ড্রেজার দিয়ে ভাল্কগেট ভর্তি করা হচ্ছে। ভাল্কগেটগুলো বালু নিয়ে চলে যাচ্ছে মানিকগঞ্জের আরিচা, মুন্সিগঞ্জ ও চাঁদপুরের বিভিন্ন জায়গায়। এমনকি উত্তোলিত বালু দিয়ে বাঘুটিয়ার ভূতের মোড়ে স্তূপ করেও রাখা হয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, সরকারি ইজারা না থাকা স্বত্ত্বেও চৌহালী বেড়িবাঁধ, জ্যোতপাড়া, খাসকাউলিয়া শিকদারপাড়া, খাসপুকুরিয়ার কাঁঠালিয়া, বাঘুটিয়া বিরিদাশুরিয়া, মেহেরনগর ও এনায়েতপুর মেডিকেল কলেজের পিছন পয়েন্ট থেকে সন্ধ্যার থেকে ভোর পর্যন্ত পর্যন্ত চলে কর্মযজ্ঞ। এই ৪টি পয়েন্টে নেতৃত্ব প্রদান করে ভিপি রবিউল, রুবেল ও সাইদ। বাঘুটিয়া ইউনিয়ের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদের নেতৃত্বে চলে বিরিদাশুরিয়া পয়েন্ট। চৌহালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা যদি মনে করেন, অফিসের কার্যালয়ের জানালা দিয়ে খাসকাউলিয়া ইউনিয়নের পয়েন্টগুলোর বালু উত্তোলন দেখবেন, তবে অফিসের জানালা দিয়েই এই অবৈধভাবে বালু উত্তোলন দেখতে পারবেন। আর অবৈধভাবে বালু উত্তোলন অব্যাহত থাকলে খাসকাউলিয়া, খাসপুকুরিয়া ও বাঘুটিয়া ইউনিয়ের ফসলী জমি, বসতবাড়ী, স্কুল, কলেজ, মসজিদ, মাদ্রাসা, পাকা রাস্তা ও সরকারি স্থাপনা নদীগর্ভে বিলীন হতে চলেছে। অবৈধভাবে বালু উত্তোলন চলমান থাকলে এলাকাবাসী সর্বশান্ত হয়ে পথে বসিবে।
আব্দুর রাজ্জাক নামে এক কৃষক বলেন, এভাবে নদী থেকে প্রতিনিয়ত বালু উত্তোলনের ফলে আমার কৃষি জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। অনেক জায়গায় ইতিমধ্য ভাঙ্গন শুরু হয়েছে।
চৌহালী উপজেলা নির্বাহী (ভারপ্রাপ্ত) কর্মকর্তাকে বারবার সরকারি মোবাইল নাম্বারে কল দেওয়া হলে তিনি রিসিভ না করার কারনে তার মন্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোঃ মোবারক হোসেন বলেন, ইজারা ব্যতিত বালু উত্তোলন সম্পূর্ন অবৈধ। চৌহালী উপজেলার অবৈধভাবে ৭টি পয়েন্টে বালু উত্তোলন বন্ধে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারি কমিশনার (ভূমি) দিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করছি।
উল্লেখ্য, ২জুন, শুক্রবার ভোর রাতে যমুনা নদীর চৌহালীর কাকুয়া চর নামক স্থানে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের দায়ে ১টি লোড-আনলোড ড্রেজার জব্দ ও চারজনকে আটক করে টাঙ্গাইল নৌ পুলিশ।
মাসুদ রানা বাচ্চু সিরাজগঞ্জ
তারিখ ০৮-০৬-২০২৩ ইং
Leave a Reply