পিরোজপুর প্রতিনিধি
বিদ্যুৎ হাওলাদার
পিরোজপুরের ইন্দুরকানীতে নৌকার পক্ষে কাজ করায় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে ছাড়াই স্বতন্ত্র প্রার্থী আউয়ালের অনুসারীরা উপজেলা যুবলীগের বিশেষ সভার আয়োজন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
উপজেলা যুবলীগের সহসভাপতি মেহেদী হাসান রিপনের সভাপতিত্বে ও যুগ্মসাধারণ সম্পাদক ইকরামুল শিকদারের সঞ্চলনায় বুধবার (১৭ জানুয়ারি) বেলা এগারোটায় উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের দলীয় কার্যালয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় বিভিন্ন ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড যুবলীগের বেশ কিছু নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
জানা যায়, গত ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ইন্দুরকানীতে আ.লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পিরোজপুর-১ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী পিরোজপুর জেলা আ.লীগের সভাপতি একেএমএ আউয়াল ও আ.লীগ মনোনীত নৌকা মার্কার প্রার্থী শ ম রেজাউল করিমের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারে অংশ নেয়। এতে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক, সাধারণ সম্পাদক শাহিন গাজী ও যুগ্মসাধারণ সম্পাদক মাসুদ রানা অবস্থান নেন নৌকার প্রার্থীর পক্ষে। অপর দিকে উপজেলা যুবলীগ কমিটির বাকি অন্যসব নেতাকর্মী ছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী একেএমএ আউয়ালের পক্ষে। এ নিয়ে যুবলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে অভ্যন্তরীণ গ্রুপিং শুরু হয়।
এদিকে সাংগঠনিক বিধি না মেনে বিশেষ সভার আয়োজন করে মানহানিকর বক্তব্য প্রদান করার অভিযোগ এনে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক মাতুব্বর উপজেলা যুবলীগের যুগ্মসাধারন সম্পাদক ইকরামুল সিকদার ও সহসভাপতি মেহেদি হাসান রিপনের বিরুদ্ধে ১৭ জানুয়ারি ইন্দুরকানী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আব্দুর রাজ্জাকের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আ.লীগ সমর্থিত নৌকা মার্কার প্রার্থী শ ম রেজাউল করিমের পক্ষে কাজ করায় ঈগল মার্কার স্বতন্ত্র প্রার্থীর অনুসারীরা সভার আয়োজন করে আমাদের বিরুদ্ধে অসত্য অভিযাগ তুলেছে। আমরা গোপনে যুবলীগের কোনো ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ডে কমিটি দেইনি। সভায় আমি ও আমার সাধারণ সম্পাদক শাহীন গাজীর নামে মানহানীকর বক্তব্য প্রদান করা হয়। যুবলীগের নামে সভা আহ্বান করা তাদের সাংগঠনিক অধিকার নাই। যা সাংগঠনের গঠনতন্ত্র পরিপন্থী কাজ। এতে করে সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ জন্য আমি উপজেলা যুবলীগের দুই নেতাকে দায়ী করে ইদুরকানী থানায় সাধারণ ডায়রী করেছি।
যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন গাজী বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য যুবলীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটি দেয়া হয়। এ কমিটি ৭ জানুয়ারির নির্বাচন পর্যন্ত কার্যকর ছিল। তবে এটা কোনো সাংগঠনিক কমিটি নয়। কিন্তু যুবলীগের কতিপয় নেতৃবৃন্দ এ বিষয়টি ভিন্ন খাতে নিয়ে সংগঠনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে।
উক্ত অভিযোগের বিষয়ে উপজেলা যুবলীগের যুগ্মসম্পাদক ইকরামুল সিকদারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, উপজেলা যুবলীগ কমিটির অন্যান্য নেতৃবৃন্দদের না জানিয়ে সভাপতি ও সম্পাদক টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন ইউনিয়ন কমিটি দেওয়ায় তাদের ছাড়াই আমরা বিশেষ সভার আয়োজন করেছি। উপজেলা যুবলীগের কমিটি থেকে আমরা সভাপতি ও সম্পাদকের অব্যাহতি চাই।
এ বিষয়ে সহসভাপতি মেহেদি হাসান রিপন বলেন, সংগঠনের অন্যান্য নেতৃবৃন্দকে না জানিয়ে অর্থের বিনিময়ে গোপনে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড কমিটি দেওয়ায় আমরা তাদের বিরুদ্ধে বিশেষ সভার আয়াজন করেছি।
ইদুরকানী থানার ওসি মো. কামরুজ্জামান তালুকদার জানান, নিজেদের মধ্যে রাজনৈতিক বিরোধের কারণে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি থানায় একটি সাধারণ ডায়রী করেছেন।
Leave a Reply