কুমুর ভরাডুবি *
লায়লা আহমেদ সেলিনা
উজান গেরামের মাইয়্যা কুমু দ্যাখতে শুনতে কম না,
বিয়্যা অইছে ভাটির গেরামে দিনভর রিকশা চালায় বেট্যা।
বিয়ান বেলা যায় বিয়্যালে আহে একটা ছাড়া দুই হান কাপুড় দিয়া পারেনা,
ফাতাফাতা অইলে নতুন কাপুড় গ্যাসটিনের ঔষুধে বেট্যার কুলায়না।
একদিন জম্মের ম্যাঘ রিকশা নিয়া যাইবার পাড়লোনা হেই দিন না খাইয়া রইছে,
পুলাডারে এক বাইত্তে গনে ফ্যান আইন্যা খাওয়াইছে।
পুলা জিদ্দে খাইবো ন্যা বাপে সহ্য করবার ন্যা পাইরা, বাপদাদার ভিটা ইট্টুহানি রাইখ্যা বেবাক বেইচ্যা বিদ্যাশে গেলো চইল্যা।
একলা থাকে দুচালা ঘরডার মইদ্যে কুমু কাম সাইরা পুলাডারে ঘুম আনাইয়্যা,
গাঙে গ্যাছে নাইবার ভিজা কাপুড়ে যৌবনডা ফাইট্টা পড়ে রাস্তা আগলাইয়া খাড়াইলো বখাটে কাইশ্যা।
কইলো চেতন থাকিস রাইত্যে আহুম ডরও দেহায় আধা রাইত্যে কুকিল সুরে ডাক দেওয়ায় কুমু দরজা খুইল্যা কয় আহেন,
কয়দিন পরপরই আহে এদিকে কুমুর পুলাপান প্যাটে আহে।
কাইশ্যারে কইলে স্বীকার না কইরা গেলো উত্তরে,
গেরামে জানাজানি অইলে মাদবররা শালিসি ডাকে
জামাইয়ের কানে গ্যালে জামাই আইয়া ভাইঙা পড়ে।
বিচারে তালাক দিয়া চুন কালি মাখাইয়া জুতা গলায় দিয়া বাইর কইরা দিলো গেরাম থাইক্যা,
গাঙের পাড় যাইয়া দেহে ভরা একটা ঠিল্যা কাপুড় দিয়্যা গলায় পেচ্যাইয়া গাঙের মইদ্যে আস্তে আস্তে গেলো তলাইয়া!
যে গাঙে নাইবার যাইয়া কুমু সব হারাইছে সেই গাঙেই জীবনডা শ্যাষ।
Leave a Reply