৩০শে এপ্রিল, ২০২৪।
ফটোক্রেডিটঃ মহিউদ্দিন আলমগীর রোমেল।
“নির্ঝরের প্রকৃতি”
ঢাকা ক্যান্টনমেন্টের নির্ঝর এলাকায় যে প্রাকৃতিক পরিবেশ তৈরী করা হয়েছে তা এক কথায় বড়ই চমৎকার। আবাসিক এলাকায় রাস্তার পাশে লাগানো হয়েছে সোনালু, কনকচূড়া ইত্যাদি বৃহদাকৃতির ফুলের গাছ। এছাড়াও কিছু কিছু রাস্তায় আছে দেবদারু আর পাম বৃক্ষের সারি।
তবে আমাকে সবচেয়ে বেশী আকর্ষণ করে সরোবর ঘিরে থাকা পিংক সাওয়ার গাছগুলো। লেকটিকে ঘিরে সারি সারি এ গাছ দিয়ে বেষ্টনীর মতো তৈরী করে সরোবরটির মনোরম রূপ, শোভা বর্ধন করা হয়েছে।
দেখতে অনেকটা চেরি ফুলের গাছের মতোই এ গাছে নীচের দিকের কাণ্ডে ডালপালা থাকে কম, আবার শীতের সময় উপরের ডালপালা হয়ে যায় পত্রহীন। গাছের বিভিন্ন উলঙ্গ সুচারু এ ডালের ধরন দেখলে চেরি গাছের কথাই মনে পড়ে বেশী। আবার চেরি গাছের মতোই পিংক কালারের ফুল ফুটতে থাকে উলঙ্গ সেই ডালকে ঘিরে, তখন একটি পাতাও দেখা দেয় না।
কিন্তু এখানেও আপনি বোকা হয়ে যাবেন। শীতের শেষ সময়ে এ পিংক কালারের ফুলগুলোই হালকা সবুজ পত্রে পরিণত হয়। আর গ্রীষ্মকালে সত্যিকারের ফুলের দেখা মেলে, ফুলগুলো তখন সবুজ কপাতার উপরে ভাসতে থাকে। এদিকে গাছের ডালপালা আরও উপরের দিকে ছড়িয়ে পড়ে। ফলে ফুলগুলো আর গাছের নীচ থেকে দেখা যায় না, শুধু দূর থেকেই দেখা যায়। তারপর সময়ের সাথে সাথে গাছটির পত্রবহুল ডালগুলো বড় হয়ে গাছের দুই পার্শ্বে ঝুলে পড়ে, তেরী করে এক প্রাকৃতিক ছাউনী বা ক্যানপি। অবসরে সেই ছাউনীর নীচে মানুষকে বসে থাকতে দেখা যায় আর দেখা যায় বিকেলের নরম আলোয় ঘুরে বেড়াতে। ছাউনীর ফাঁক গলিয়ে পাখির বাসাও চোখে পড়ে। একটি ছবি তোলার সময় হঠাৎই একটি পাখি, ডাল থেকে পানিতে পড়া অবস্থায় উড়াল মারে। দৃশ্যটি চলে আসে মোবাইলে। বেশ আনন্দ লেগেছে ছবিটি দেখে।
লোকজন শীতে রোদের জন্য আর গ্রীষ্মে ছায়ার জন্য প্রয়োজনে, অপ্রয়োজনে সেই গাছের ক্যানপির নীচ দিয়েই হেঁটে বেড়ায়। এতে করে এর পাশ ঘেঁষে চলা পিচ ঢালা আধুনিক পথ থাকা সত্ত্বেও গাছের ঢেউ খেলানো ছাউনীর নীচ দিয়ে দৃশ্যমান হয়ে উঠেছে সুন্দর একটি মেঠো পথ।
ছবিতে আমি গাছের ঢেউ খেলানো ক্যানপি তুলে ধরার চেষ্টা করেছি দিনের বিভিন্ন সময়ে। সেই সাথে আলোছায়ার বৈচিত্র্য তুলে ধরার জন্য সকাল, দুপুর, বিকাল ও সন্ধ্যার ছবি দিয়েছি। গাছে পাতার পরিমাণ কম থাকায় আলো ছায়ার খেলা চোখে পড়ার মতোই তবে দীর্ঘদিন বৃষ্টি শূন্য থাকয়, বৃক্ষ পত্রবহুল না থাকায় গভীর ছায়া সৃষ্টি হয়েছে কম। অবশ্য পাতাগুলো পাতলা থাকায় গাঢ় ছায়া সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনাও কম।
আমি বিশ্বাস করি ছবিতে ভর দুপুর আর বিকালের আলো যথেষ্ঠ উপভোগ্য হয়ে উঠেছে। তবে সকাল ও সন্ধ্যার ছবিকেও আপনি বাদ দিতে পারবেন না। ছবিগুলো কোনটা কোন সময়ে তোলা তা ছায়ার দিকে পর্যবেক্ষণ করলেই আপনি বুঝতে পারবেন। আপনাকে বলে দেয়ার প্রয়োজন নাই।
Leave a Reply