সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
১৮ বছর পূর্বে তালাকের মাধ্যমে স্বামী-স্ত্রী পৃথক। মা ঢাকার গার্মেন্টসে চাকুরী করে নানা বাড়িতে বসবাস করে রত্না। নানা ভিক্ষাবৃত্তির মাধ্যমে তাকে কোলে পিঠে মানুষ করে। সেই রত্না এখন সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী হয়ে নানা বাড়িতে কোটি টাকা মূল্যের বাড়ি তৈরী ও বাড়িতে ভিআইপি আসবাবপত্র স্থাপন, সোনামুখীতে দ্বিতলা বাসা তৈরীর কাজ চলমান। শিক্ষার্থী হয়ে বেসরকারি মেডিকেল কলেজে লেখাপড়া, নানা বাড়িতে বিলাসবহুল বাড়ি তৈরী ও সোনামুখীতে দ্বিতলা বাড়ির তৈরীর এতো টাকার আয়ের উৎস নিয়ে এলাকায় চলছে নানান গুঞ্জন। সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার রতনকান্দি ইউনিয়নের হরি নারায়নপুর গ্রামের গোলাম রব্বানীর একমাত্র মেয়ে রত্না খাতুনের (২০) এমন বিলাসবহুল জীবন যাপনে এলাকাবাসীর মধ্যে চলছে নানা রকম জল্পনা-কল্পনা।
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, আজ থেকে ২২ বছর পূর্বে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার রতনকান্দি ইউনিয়নের হরি নারায়নপুর গ্রামের রব্বানী’র সাথে বগুড়ার জেলার ধুনট উপজেলার গোপাল নগর গ্রামের কুড়ান আলীর মেয়ে মোমেনা খাতুনের বিবাহ হয়। বিবাহের ৫বছর পর রতœা নামে একটি মেয়ে জন্ম গ্রহণ করেন। জন্ম গ্রহনের পর থেকে রব্বানী ও মোমেনা খাতুনের সংসার টিকে না। মোমেনা খাতুন তার মেয়ে রত্নাকে নিয়ে গোপাল নগর বাবার বাড়িতে চলে যান। মোমেনা খাতুনের পিতা কুড়ান আলী একজন ভিক্ষুক হওয়ায় অভাব অনটনের সংসারে মোমেনা ঢাকায় গার্মেন্টসে চলে যায়। রত্না খাতুন নানার বাড়িতে থেকে স্থানীয় স্কুল থেকে এসএসসি পাশ করে। পরে এইচএসসি পাশ করে সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজে ভর্তি হয়। খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজে ভর্তি হওয়ার পর থেকে রত্না খাতুনের কপাল খুলে যায়। রত্না এখন চতুর্থ বর্ষের ছাত্রী। মাদক ব্যবসার করে কোটি কোটি টাকার সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছেন বলে এমন ধারণা করছেন এলাকাবাসী। ভিক্ষুক নানা বাড়িতে প্রায় ১ কোটি টাকা মূল্যের বাড়ি তৈরী করেছেন। বাড়িতে উন্নত মানের নামি দামি কোম্পানীর টিভি. ফ্রিজ, এসিসহ ভিআইপি আসবাবপত্র স্থাপন করেছেন। ৬ মাস পূর্বে যে বাড়িতে চালের টিন দিয়ে বৃষ্টির পানি পড়ত সেই বাড়িতে এখন ওয়ালসেট ভিআইপি ডেকোরেশন বাড়ি দেখে এলাকাবাসীর মধ্যে নানা রকম গুঞ্জন শুরু হয়েছে।
এলাকাবাসী বলেন, তার নানা একজন ভিক্ষুক ছিল। ভিক্ষা করে তার ৫ মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। ভিক্ষুকের নাতনী রত্না এসএসসি পাশের পর এলাকা ছেড়ে এনায়েতপুর খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজে ভর্তি হওয়ার পর থেকেই সে যেন আলাদিনের চেরাগ হাতে পেয়েছেন। সেই ভিক্ষুকের বাড়িতে লাগানো হয়েছে ভিআইপি এসি। জনশ্রæতি রয়েছে রত্নার গাড়ি ছাড়া বাড়িতে আসেন না। তার ভ্যানেটি ব্যাগে সবসময় ১ হাজার টাকার নোট ছাড়া কোন খরচা টাকা থাকে না। তার এ আয়ের উৎস কোথায়! এলাকাবাসী তা বলতে পারেন না। রত্নার মা মোমেনাা খাতুন বলেন, আমি গার্মেন্টস কর্মী ছিলাম। এখন অসুস্থ্য। রতœা’র বন্ধু বান্ধবীরা বাড়িতে আসে। তাই রত্না’র আয়ের টাকা দিয়ে বাড়ি করেছি, বাড়িতে এসি লাগিয়েছি। সোনামুখীতে রত্না খালার জায়গার উপর দ্বিতলা বিশিষ্ট বাড়ির কাজ চলছে। তবে রত্নার আয়ের উৎস কি তা সে বলতে পারেন না। এমন গুঞ্জনের বিষয়ে রত্না খাতুন বলেন, আমি মাদক ব্যবসা করি না। আমি একজন স্টুডেন্টস। ব্যাংকে ঋণ নিয়ে আমি নানার বাড়িতে বাড়ি তৈরী করেছি। সোনামুখীতে আমার খালাকে একটি বাড়ি তৈরী করে দিচ্ছি। তবে এতো টাকার উৎস কি এমন প্রশ্ন করলে তিনি এড়িয়ে যান। এলাকাবাসী রত্নার এতো টাকার উৎস খতিয়ে দেখার জন্য দুদকসহ আইন শৃংখলা বাহিনীর উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
Leave a Reply