তুমি হয়তো ভাবছো আমি কেমন আছি!
আঁকাবাঁকা পাহাড়ি রাস্তায় ছুটে চলি
রাস্তার পাশে ফুটে আছে নাম না জানা বুনো ফুল
অবহেলায় বেড়ে ওঠা বাঁশঝোপের আড়ালে
একটা হলদে পাখি চুপচাপ চোখ মেলে দেখে
আবার চোখ বুজে বিশ্রাম নেয়
শতবর্ষীয় বটের ঝুরি নেমে গেছে পাহাড়ের গভীর খাদে
আমার কোন শিকড় নেই
ভেঙে পড়ার আশংকাও নেই
বটের ছায়ায় জিরিয়ে নিই কিছুক্ষণ
তারপর প্রাণবন্ত ছুটে চলা বুনো রাস্তায়
এই আমি আমার ব্যস্ততা নিয়ে বেশ আছি
আমি ভালো আছি।
আঁকাবাঁকা চেঙ্গী নদী আমাকে ভালোবাসে
নদীর ধারের কাশফুল আমাকে ভালোবাসে
তেলসুর, চাপালিশ, গর্জন, সেগুনের বন আমাকে ভালোবাসে
ভোরের সোনালি রোদ আমার ছোঁয়ায় মিষ্টি হাসে
আমার আঙিনায় শিশির ঘুমায় কুয়াশার চাদর জড়িয়ে
রাতের গভীর পরশে হিম হয়ে আসে সুশীল সমীরণ
ভোরে পিঠে ঝুরি নিয়ে কাজে যায় যুবতী পাহাড়ি মেয়ে
পাহাড়ের গা বেয়ে ঝরে পড়ে স্বচ্ছ জলের প্রস্রবন
শৈলপ্রপাত বয়ে চলে মৃদু কলকল স্বরে
প্রতিদিনের চড়াই উৎরাই প্রকৃতি আর মানুষের ভালোবাসা নিয়ে আমি বেশ আছি
সত্যি, আমি ভীষণ ভালো আছি।
এখানে প্রতিদিন কবিতা ঝরে পড়ে রাতের নক্ষত্রের আলোয়
পাহাড়ি মেয়ের ছন্দময় পায়ের পাতায় খেলা করে জীবনের সুর
কখনো একটানা পাখির কলরব
তারপর চুপচাপ নীরবতা
এখানে দূষিত শব্দের উত্তাপ নেই
নেই কোন দূষণ মরুৎ মৃত্তিকার
এখানে প্রকৃতি শুদ্ধ স্বচ্ছসলিলা
নেই কোন না পাওয়ার হাহাকার
এখানে মুক্ত প্রাণ ঘুমিয়ে পড়ে প্রকৃতির কোলে
ঘুম ভাঙে পাখির কূজনে, সূর্যের সোনালি আলোয়
এখানে আমি বেশ আছি
এখানে, সত্যি আমি ভীষণ ভালো আছি।
০৩ জানুয়ারি, ২০২৪
খাগড়াছড়ি।
Leave a Reply