মানুষ কতো কী শিখে যায়
মানুষ কতো কী শিখে যায়?
এই তো সেদিনের কথা—
ছোটবেলা হাঁটতে পারতাম না।
মা ধরিয়ে ধরিয়ে হাঁটাতো, অথচ এখন আমি
পুরোদস্তুর হাঁটতে পারি।
মা’র কথা আর মনেই পড়ে না।
এখন আমি হাঁটতে শিখেছি।
একটা সময় ছিলো, মা’কে জড়িয়ে না ধরলে
ঘুম আসতো না।
মা’য়ের বুকে মাথা পেতে ঘুমোতাম।
অথচ, এখন আমি একা ঘুমানোর কৌশল
শিখে গেছি।
কেউ আমায় শিখিয়ে দেয় নি।
মা মাঝে মাঝে খুব আমায় বকুনি দিতো।
আমি ভীষণ রাগ করতাম।
‘এতো বড় হয়েছিস, এখনো নিজে মুখে ভাত
তুলে খেতে পারিস না।
অকর্মার ঢেকি।’
কিন্তু এখন আর রাগ করি না।
কারণ সেখানেও মা’য়ের ভালোবাসা ছিলো।
এখন আমি নিজ হাতে ভাত তুলে খাই।
বাবার পৈতাটা প্রথম যেদিন কাঁধে নিয়েছিলাম
সেদিন প্রথম আমার মনে বিপ্লব দেখা
দিয়েছিলো। ভাবতাম,
এতোকিছু বাবা সামলাতেন কী করে!
অথচ,
বিশ্বাস করো, আমার সেই ব্যর্থ বিপ্লবের কথা
আমি কাউকে জানাই নি।
কারণ, এখন আমি সবকিছু গোপন করতে
শিখে গেছি।
একদিন তুমি এলে, বললে;
‘ভালোবাসো আমায়।’
আমি ভালোবাসলাম।
কারণ, আমি ভালোবাসতে শিখে গেছি।
অথচ, এখন আর সেই তুমি, তুমি নেই।
অনেক নাবিকের ভিড় তোমার উথালপাথাল
যমুনায়। তাদের সামলাতে গিয়ে
আমার কথা এখন তোমার মনেই পড়ে না।
অথচ,
তোমার প্রতিটা অবহেলায়
আমার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে।
কিন্তু বিশ্বাস করো, তবুও আমি কোনদিন
অভিযোগ
করি না।
তোমায় ভুলে যাবো বলে
কোনরূপ কালো কালো মেঘের আয়োজন
করি না কোথাও।
কেননা, এখন আমি ভুলে যেতেও শিখেছি।
---------
—
প্রকাশ-৫২
Leave a Reply